ধানের
ব্লাষ্ট রোগ(Leaf Blast of Rice) চেনার উপায় ও তা প্রতিকারে করনীয়
ধানের গাছে ৪ধরনের ব্লাস্ট হয়ে থাকে।
(১) পাতা ব্লাস্ট
(২) গীট ব্লাস্ট
(৩) শীষ ব্লাস্ট
(৪)কলার ব্লাস্ট
বিভিন্ন প্রকার ব্লাস্ট রোগের
লক্ষণঃ
(১) পাতা ব্লাস্ট
-পাতায় ছোট ছোট ডিম্বাকৃতির সাদা বা বাদামি দাগ দেখা দেয়।
-পর্যায়ক্রমে সমস্ত পাতা ও ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে।
-আক্রমণ বেশি হলে ক্ষেতের বিভিন্ন স্থানে রোদে পুড়ে যাওয়ার মতো দেখা যায়।
-আক্রান্ত ক্ষেতে অনেক সময় পাতা ও খোলের সংযোগস্থলে কালো দাগ দেখা দেয় যা পরবর্তীতে পচে পাতা ভেঙে পড়ে ফলন বিনষ্ট হয়।
(২) গীট ব্লাস্ট
-ধানের থোড় বা গর্ভবতী অবস্থায় এরোগ হলে গীটে কালো দাগের সৃষ্টি হয়।
-ধান গাছ গিট থেকে খসে পরে।
(৩) নেক ব্লাস্ট
-শীষ অবস্থায় এ রোগ হলে শীষের গোড়া কালো হয়ে যায়।
-আক্রমণ বেশি হলে শীষের গোড়া ভেঙ্গে যায়।
-ধান চীটা হয়।
(৪)কলার ব্লাস্ট
- ধানের কলার অঞ্চলে ( কান্ডের যে অংশ থেকে পত্রফলক বা
leaf blade বের হয়) আক্রমণ করে। আক্রমণের পর এই জায়গাটি কালো হয়ে যায়।
রোগের কারণ :
Pyricularia
oryza ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।
★আক্রান্তের সময়:
** বাংলাদেশে এটি বর্তমানে ধানের অন্যতম প্রধান রোগ। এ রোগটি বোরো ও আমন মৌসুমে বেশী হয়।
** চারা অবস্থা থেকে ধান পাকার আগ পর্যন্ত যে কোন সময় এ রোগ দেখা যায়।
*** অনুকূল অবস্থায় রোগটি দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। রোগপ্রবণ জাতে রোগ সংক্রমণ হলে শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষতি হয়ে থাকে।
রোগের বাহক ও উৎস
১) ধানের ব্লাস্ট রোগ বীজের মাধ্যেমে এক মৌসুম হতে অন্য মৌসুমে ছড়ায়।
২) রোগাক্রান্ত গাছের জীবাণু, বাতাস ও পোকার মাধ্যেমে এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে।
৩) রোগাক্রান্ত বীজ ও আশেপাশের আক্রান্ত গাছ থেকেও এ রোগের জীবাণু এসে থাকে।
৪) জমিতে অবস্থিত বিগত বছরের জীবাণু থেকে এ রোগ হতে পারে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১।জমিতে সব সময় পানি ধরে রাখা।
২। প্রতি লিটার পানিতে (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন: নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি ০.৬০ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা। অথবা প্রতি লিটার পানিতে ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: ট্রপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি ০.৮১ গ্রাম বা অন্যান্য নামের এ রোগের জন্য অনুমোদিত ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা।
সাবধানতাঃ
★আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না।
করনীয়ঃ
১.ধান কাটার পর শুকিয়ে নিয়ে নাড়া জমিতেই পুড়িয়ে ফেলা।
২. মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার প্রয়োগ করা
৩. মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করা এ রোগের আশঙ্কা থাকলে জমিতে পটাশ সার দুইবারে প্রয়োগ করা (জমি তৈরির সময় অর্ধেক ও চারা লাগানোর ৩০ দিন উইরিয়া উপরি প্রয়োগের সময় অর্ধেক)।
লেখায়-
মনিষা আক্তার
কৃষি অনুষদ(২০ ব্যাচ)
হাবিপ্রবি,দিনাজপুর।
#কৃষি_বাজার #ধানের_রোগ #ধানের-ব্লাস্ট_রোগ
#ব্লাস্ট_রোগের_প্রতিকার #ব্লাস্ট_রোগের_লক্ষণ #krishibazar #RiceDisease
#BlastDisease #plantCare #BlastDiseaseControl