পাতা ও গাছের গায়ে সাদা পাউডারের মত দাগ দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে ।
আক্রান্ত বেশী হলে পাতা হলুদ বা কালো হয়ে মারা যায় ।
সম্ভব হলে গাছের আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন।
ক্ষত পরিষ্কার রাখুন এবং পানি নিষ্কাষনের ভাল ব্যবস্থা রাখুন।
(ম্যানকোজেব+মটোলোক্সিল) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রিডোমিল গোল্ড ২ গ্রাম/ লিটার হারে অথবা সালফার ছত্রাক নাশক যেমন কুমুলাস ৪ গ্রাম বা গেইভেট বা মনোভিট বা থিওভিট ২ গ্রাম অথবা কার্বেণ্ডাজমি গ্রুপে ছত্রাক নাশ যেমন: গোল্ডাজমি ০.৫ মি.লি. বা এমকোজমি বা কিউবি বা চ্যামপিয়ন ২ গ্রাম/ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।
আগাম বীজ বপন করুন।
সুষম সার ব্যবহার করুন।
রোগ প্রতরিোধী জাত যমেন: বারি উদ্ভাবিত/ অন্যান্য উন্নত জাতের চাষ করুন।
বিকল্প পোষক যেমন: আগাছা পরিষ্কার রাখুন।
২।রোগের নামঃ
আলুর ব্ল্যাক লেগ রোগ
রোগের কারণঃ
Erwinia carotovora নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
লক্ষণঃ
আলুর ব্ল্যাক লেগ বীজ আলুর একটি প্রধান রোগ।
মাঠে ও সংরক্ষিত আলুতে এ রোগ দেখা যায়। মাঠে গাছের গোড়ায় কালো দাগ পড়ে বলে কারো পা এবং সংরক্ষণাগারে টিউবার আক্রান্ত হলে নরম পচা রোগ বলে।
আক্রান্ত গাছের কান্ডের গোড়ার দিকে বাদামী থেকে কারো রঙের দাগ পড়ে এবং যা সহজেই সুস্থ্য অংশ থেকে আলাদা করা যায়।
আক্রান্ত ডাল তুলে নাকের কাছে ধরলে এক ধরণের পঁচা আলুর মত গন্ধ পাওয়া যায়। আক্রান্ত গাছের আলু পচে যায়।
উচ্চ তাপমাত্রা এবং জমির উচ্চ আর্দ্রতা এ রোগ বিস্তারে সহায়ক।
এ রোগটি বীজ ও মাটিবাহিত।
প্রত্যায়িত অথবা রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করা।
অতিরিক্ত সেচ পরিহার করা।
উচ্চ তাপ এড়ানোর জন্য আগাম চাষ করা।
ভালভাবে বাছাই করে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা।
আলু লাগানোর সময় জমিতে সর্বশেষ চাষের পূর্বে প্রতি হেক্টরে ২০-২৫ কেজি হারে ষ্ট্যাবল ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করা।
বপনের পর যত শীঘ্র সম্ভব গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়া।
ষ্ট্যাবল ব্লিচিং পাউডার প্রতি লিটার পানিতে ৩ গ্রাম অথবা বোরিক এসিড প্রতি লিটার হালকা গরম পানিতে ৩০ গ্রাম দ্রবণে টিউবার শোধন করে বীজ আলু সংরক্ষণ করা।
রোগ দেখা মাত্র পানি সেচ বন্ধ করা। সেচের প্রয়োজন হলে আক্রান্ত অংশ বাদ দিয়ে সেচ দেওয়া।
আলুর ব্ল্যাক লেগ রোগে আক্রান্ত গাছ আলুসহ আশেপাশের মাটি দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নষ্ট করে ফেলা এবং আক্রান্ত জায়গায় ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করা।
আলুর নরম পচা রোগ Potato Soft Rot Disease (Erwinia carotovora) ছত্রাক রোগ।
আক্রান্ত আলুর কোষ পচে যায়।
পচা আলুতে উগ্র গন্ধ বের হয়।
চাপ দিলে আলুা থেকে দূষিত পানি বের হয়।
আক্রান্ত অংশ ঘিয়ে রংয়ের এবং নরম হয়।
সুস্থ ও রোগ মুক্ত বীজ ব্যবহার করা।
অতিরিক্ত সেচ পরিহার করা।
উচ্চ তাপ এড়ানোর জন্য আগাম চাষ করা ১% ব্লিচিং পাউডার বা ৩% বরিক এসিডের দ্রবনে আলু বীজ শোধন করে সংরক্ষণ করা।
আলুর শুকনো পচা রোগ Potato Dry Rot Disease (Fusarium sp.) ছত্রাক রোগ। ।
আলুর গায়ে কিছুটা গভীর কালো দাগ পড়ে।
আলুর ভিতরে গর্ত হয়ে যায়।
প্রথম পচন যদিও ভিজা থাকে পরে তা শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়।
আক্রান্ত অংশে গোলাকার ভাঁজ পড়ে ও খখনো ঘোলাটে সাদা ছত্রাক জালিকা দেখা যায়।
সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনাঃ
আলু ভালভাবে বাছাই করে সংরক্ষণ করা।
ডাইথেন এম ৪৫ দ্রবণ ০.২% দ্বারা বীজ শোধন করা।
প্রতি কেজিতে ২ গ্রাম টেটো গুাড়া দিয়ে আলু বীজ শোধন করা।
বস্তা, ঝুড়ি ও গুদাম ঘর ইত্যাদি ৫% ফরমালিন দ্বারা শোধন করা।
আলুর ভাইরাস জনিত রোগ
রোগের কারণঃ
Potato Leaf Roll Virus (PLRV), Potato Virus Y (PVY), Potato Virus X (PVX) এবং Potato virus S (PVS) দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। ভাইরাসসমূহ জাব পোকা এবং স্পর্শের মাধ্যমে গাছ থেকে গাছে ছড়ায়।
পাতায় বিভিন্ন ধরনের ছিটে দাগ পড়ে, পাতা বিকৃত ও ছোট হয়।
আলুর জাতের উপর নির্ভর করে লক্ষন ভিন্নতর হয়।
লতা ঝুলে পড়ে এবং পরবর্তীতে গাছ মারা যায়।
এই সমস্ত ভাইরাস এককভাবে অথবা যৌথভাবে আলু গাছ আক্রমণ করে।
সাধারণভাবে ভাইরাস আক্রান্ত আলু গাছ আকারে ছোট, পাতা কোঁকড়ানো, হলুদ অথবা মোজাইকের রং হয় এবং খসখসে হয় যা সহজেই নিবিড় পর্যবেক্ষণ করলে কৃষক সুস্থ গাছ থেকে ভাইরাস আক্রান্ত আলু গাছ আলাদা করতে পারবে।
ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হলে আলুর আকার ছোট হয় এবং আলুর উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়।
সুস্থ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা।
রোগমুাক্ত গাছ আলু সহ রোগিং করা।
ভাইরাসের বাহক পোকা (জাব) দমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
ভাইরাস মুক্ত প্রত্যায়িত বীজ আলু ব্যবহার করা।
আগাম জাতের আলু চাষ যা নভেম্বরের ২৫ তারিখের (১১ কার্তিক) মধ্যে করা এবং আগাম সংগ্রহ করা।
জমি আগাছা মুক্ত করা।
জমির আশে পাশের বিকল্প পোষক গাছ যেমন-টমেটো, তামাক, মরিচ, ধুতরা, বথুয়া, ফোসকা বেগুন ইত্যাদি থাকলে তা পরিষ্কার করা।
সারিতে ভালভাবে মাটি উঁচু করে দেয়া।
আলু গজানোর সাথে সাথে (২০-২৫ দিন বয়স হতে) নিয়মিতভাবে ভাইরাস আক্রান্ত গাছ রোগিং অর্থাৎ আলু সহ তুলে মাটির নীচে পুঁতে ফেলা।
আলুর পাতা মোড়ানো রোগ Potato Leaf Roll Disease ভাইরাসজনিত রোগ।
আক্রান্ত গাছের পাতা খসখসে, খাড়া ও উপরের দিকে যায়।
আগার পাতার রং হালকা সবুজ হয়ে যায়।
গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়, গাছ খাটো হয় এবং সোজা হয়ে উপরে দিকে দাঁড়িয়ে থাকে।
কখনও আক্রান্ত পাতার কিনারা লালচে বেগুনি ছোট রঙয়ের হয়।
আলুর সংখ্যা কম হয় এবং আলু ছোট ছোট হয়।
রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা।
আক্রান্ত গাছ টিউবার সহ তুলে ফেলা (রোগিং)।
ভাইরাস রোগের বাহক জাবপোকা দমনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। যেমন ডায়াজিনন, এসাটাফ, ডায়মেথোয়েট, এডমায়ার, টিডো ইত্যাদি।
জাব পোকা দমনে ইমডাক্লোরোপি গোত্রের কীটনাশক যেমন-এডমায়ার (১ মিলি/লিটার পানিতে) অথবা ম্যালাথিয়ন (২ মিলি/লিটার পানিতে) ১০-১৫ দিন পর পর জমিতে নিয়মিত ভাবে স্প্রে করা।
গাছের বয়স ৮০ দিন হলে আলু গাছ শিকড়সহ তুলে ফেলা এবং এরপর কমপক্ষে ৮-১০ দিন আলু জমিতে মাটির নীচে রেখে দেয়া।
আলুর ঢলে পড়া রোগ
Ralstonia solanacearum নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে ।
গাছের যে কোন বয়সে এ রোগ দেখা যায়।
গাছ হঠাৎ ঢলে পড়ে। সবুজ অবস্থায় চুপসে ঢলে পড়ে।
গোড়ার দিকে গাছের কান্ড ফেড়ে দেখলে বাদামী আক্রান্ত এলাকা দেখা যায়।
আক্রান্ত আলুর কাটলে ভিতরে বাদামী দাগ দেখা যায়।
আলুরে চোখে সাদা পুঁজের মত দেখা যায় এবং আলু অল্প দিনের মধ্যেই পচে যায়।
এ রোগে গাছ সাধারণত সবুজ অবস্থায়ই ঢলে পড়ে।
কান্ডের নিম্নাংশ ও শিকড় অক্ষত থাকে। কা-ের ভিতরে পরিবহন কলায় বাদামী বর্ণের উপস্থিতি, ঢলে পড়া রোগের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা কা- চিরলে স্পষ্ট দেখা যায়।
আক্রান্ত গাছের কা- কেটে পরিষ্কার পানিতে খাড়া করে রাখলে কিছুক্ষণ পর দুধের মত সাদা পুঁজ বের হয়।
সংগৃহীত আলুর চোখে সাদা পুঁজের মত দেখা যায় এবং আলু অল্প দিনের মধ্যেই পচে যায়।
বীজ আলুর ক্ষেত্রে একর প্রতি যদি ১ টি গাছ আক্রান্ত হয় তাহলে সেই মাঠ হতে বীজ আলু কখনই সংগ্রহ করা যাবে না।
আলুর ঢলে পড়া রোগ প্রধানত তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা দ্বারা প্রভাবিত হয়। সাধারনতঃ ২৮-৩০০ সে তাপমাত্রা এ রোগের জন্য সবচেয়ে অনুকূল।
রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা।
আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়ে বা পুতে ফেলা।
আলু লাগানোর ২০-২৫ দিন আগে জমিতে ব্লিচিং পাউডার বিঘা প্রতি ২.৬ কেজি ব্যবহার করা।
পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা।
রোগ দেখা দিলে পানি সেচ বন্ধ করতে হবে।
প্রত্যায়িত অথবা রোগমুক্ত এলাকা থেকে সুস্থ ও রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করা।
কাটা বীজ লাগানো পরিহার করা।
আলু লাগানোর সময় জমিতে সর্বশেষ চাষের পূর্বে প্রতি হেক্টরে ২০-২৫ কেজি হারে ষ্ট্যাবল ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করা।
বপনের পর যত শীঘ্র সম্ভব গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়া।
পরিমিত মাত্রায় সেচ প্রয়োগ করা।
আক্রান্ত গাছ আলুসহ আশেপাশের মাটি দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নষ্ট করা এবং আক্রান্ত জায়গায় ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করা। সেচের প্রয়োজন হলে আক্রান্ত অংশ বাদ দিয়ে সেচ দেওয়া।
আক্রান্ত জমিতে পরবর্তীতে আলু, টমেটো, বেগুন, মরিচ, তামাক ইত্যাদি জাতীয় ফসল চাষ না করা।
গম, ধান, ভুট্টা, কাউন, বার্লি, সরগাম, পেয়াজ, রসুন, কপি, গাজর ইত্যাদি ফসল দিয়ে শস্য পর্যায় অবলম্বন করা। বীজ আলু জমিতে ভুট্টা দ্বারা আন্তঃফসল চাষ করলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কম হয়।
গ্রীষ্মকালে কয়েকবার জমি চাষ করে প্রখর রৌদ্রে মাটি শুকিয়ে নিতে হবে এতে মাটিতে অবস্থিত রোগ জীবাণু অনেক কমে যায়।
এ রোগ দেখা মাত্র আক্রান্ত জমিতে সেচ প্রদান, নিড়ানী দেওয়া, মালচিং ইত্যাদি বন্ধ করা।
আলু লাগানোর পূর্বে জমিতে ধান থাকলে সে ধানের নাড়া শুকিয়ে মাটিতে বিছিয়ে পুড়িয়ে ফেলা।
যে জমি সব সময় ভেজা বা স্যাঁতসেঁতে থাকে সে জমিতে বীজ আলু কখনই চাষ না করা।
আলুর ঢলে পড়া রোগ
Ralstonia solanacearum নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে ।
গাছের যে কোন বয়সে এ রোগ দেখা যায়।
গাছ হঠাৎ ঢলে পড়ে। সবুজ অবস্থায় চুপসে ঢলে পড়ে।
গোড়ার দিকে গাছের কান্ড ফেড়ে দেখলে বাদামী আক্রান্ত এলাকা দেখা যায়।
আক্রান্ত আলুর কাটলে ভিতরে বাদামী দাগ দেখা যায়।
আলুরে চোখে সাদা পুঁজের মত দেখা যায় এবং আলু অল্প দিনের মধ্যেই পচে যায়।
এ রোগে গাছ সাধারণত সবুজ অবস্থায়ই ঢলে পড়ে।
কান্ডের নিম্নাংশ ও শিকড় অক্ষত থাকে। কা-ের ভিতরে পরিবহন কলায় বাদামী বর্ণের উপস্থিতি, ঢলে পড়া রোগের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ যা কা- চিরলে স্পষ্ট দেখা যায়।
আক্রান্ত গাছের কা- কেটে পরিষ্কার পানিতে খাড়া করে রাখলে কিছুক্ষণ পর দুধের মত সাদা পুঁজ বের হয়।
সংগৃহীত আলুর চোখে সাদা পুঁজের মত দেখা যায় এবং আলু অল্প দিনের মধ্যেই পচে যায়।
বীজ আলুর ক্ষেত্রে একর প্রতি যদি ১ টি গাছ আক্রান্ত হয় তাহলে সেই মাঠ হতে বীজ আলু কখনই সংগ্রহ করা যাবে না।
আলুর ঢলে পড়া রোগ প্রধানত তাপমাত্রা ও আপেক্ষিক আর্দ্রতা দ্বারা প্রভাবিত হয়। সাধারনতঃ ২৮-৩০০ সে তাপমাত্রা এ রোগের জন্য সবচেয়ে অনুকূল।
রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা।
আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়ে বা পুতে ফেলা।
আলু লাগানোর ২০-২৫ দিন আগে জমিতে ব্লিচিং পাউডার বিঘা প্রতি ২.৬ কেজি ব্যবহার করা।
পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা।
রোগ দেখা দিলে পানি সেচ বন্ধ করতে হবে।
প্রত্যায়িত অথবা রোগমুক্ত এলাকা থেকে সুস্থ ও রোগমুক্ত বীজ সংগ্রহ করা।
কাটা বীজ লাগানো পরিহার করা।
আলু লাগানোর সময় জমিতে সর্বশেষ চাষের পূর্বে প্রতি হেক্টরে ২০-২৫ কেজি হারে ষ্ট্যাবল ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করা।
বপনের পর যত শীঘ্র সম্ভব গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দেওয়া।
পরিমিত মাত্রায় সেচ প্রয়োগ করা।
আক্রান্ত গাছ আলুসহ আশেপাশের মাটি দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নষ্ট করা এবং আক্রান্ত জায়গায় ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করা। সেচের প্রয়োজন হলে আক্রান্ত অংশ বাদ দিয়ে সেচ দেওয়া।
আক্রান্ত জমিতে পরবর্তীতে আলু, টমেটো, বেগুন, মরিচ, তামাক ইত্যাদি জাতীয় ফসল চাষ না করা।
গম, ধান, ভুট্টা, কাউন, বার্লি, সরগাম, পেয়াজ, রসুন, কপি, গাজর ইত্যাদি ফসল দিয়ে শস্য পর্যায় অবলম্বন করা। বীজ আলু জমিতে ভুট্টা দ্বারা আন্তঃফসল চাষ করলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কম হয়।
গ্রীষ্মকালে কয়েকবার জমি চাষ করে প্রখর রৌদ্রে মাটি শুকিয়ে নিতে হবে এতে মাটিতে অবস্থিত রোগ জীবাণু অনেক কমে যায়।
এ রোগ দেখা মাত্র আক্রান্ত জমিতে সেচ প্রদান, নিড়ানী দেওয়া, মালচিং ইত্যাদি বন্ধ করা।
আলু লাগানোর পূর্বে জমিতে ধান থাকলে সে ধানের নাড়া শুকিয়ে মাটিতে বিছিয়ে পুড়িয়ে ফেলা।
যে জমি সব সময় ভেজা বা স্যাঁতসেঁতে থাকে সে জমিতে বীজ আলু কখনই চাষ না করা।
আলুর কান্ড পচা রোগ Stem Rot of Potato (Selerotium rolfsii) ছত্রাকজনিত রোগ।
এ রোগের আক্রমণের ফলে বাদামী দাগ কান্ডের গোড়া ছেয়ে ফেলে।
গাছ ঢলে পড়ে এবং নিচের পাতা হলদে হয়ে যায়া।
আক্রান্ত অংশে বা আশেপাশে মাটিতে ছত্রাকের সাদা সাদা জালিকা দেখা যায়।
আলুর গা থেকে পানি বের হয় এবং পচন ধরে।
আক্রান্ত গাছ কিছুটা মাটি সহ সরিয়ে ফেলতে হবে।
জমি গভীর ভাবে চাষ করে কয়েক দিন ফেলে রাখা।
জমিতে পচা জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
বীজ বপনের পূর্বে আলু বীজ শোধন করা (ম্যানকোজের ২ গ্রাম + ১ লিটার পানি)।
ট্রাইকোডারমা ভিড়িডি ৩-৪ গ্রাম + ১ লিটার পানি মিশিয়ে বীজ শোধন করা।
আলুর আগাম ধ্বসা রোগ Early Blight of Potato (Alternaria solani) ছত্রাকজনিত রোগ।
নিচের পাতা ছোট ছোট বাদামী রংয়ের অল্প বসে যাওয়া কৌনিক দাগ পড়ে।
আক্রান্ত অংশে সামন্য বাদামী এলাকাকর সাথে পর্যায়ক্রমে কালচে রংয়ের চক্রাকার দাগ পড়ে।
পাতার বোটা ও কান্ডের দাগ অপেক্ষাকৃত লম্বা ধরনের হয়।
গাছ হলদে হয়, পাতা ঝরে পড়ে। অকালে গাছ মারা যেতে পারে।
সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত বীজ বপন করা।
রোগ মুক্ত বীজ সংগ্রহ করা।
প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাতের চাষ করা।
সুষম সার প্রয়োগ এবং সময়মত ও পরিমিত সেচ প্রয়োগ করা।
রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতি লিটার পানিতে রোভরাল ২ গ্রাম ও ডায়থেন এম- ৪৫, নেমিসপোর ২ গ্রাম মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করা (পাওয়ার স্পেয়ার দিয়ে)।
আলুর নাবী ধ্বসা বা লেট ব্লাইট রোগ Late Blight of Potato
Phytophthora infestans নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
এ রোগের আক্রমণে প্রথমে পাতায় ছোপ ছোপ ভেজা হালকা সবুজ গোলাকার বা এলোমেলো দাগ দেখা দেয়, যা দ্রুত কালো হয়ে পচে যায়।
গাছের কান্ড এবং টিউবারেও এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়।
সকাল বেলা মাঠে গেলে পাতার নীচে সাদা সাদা পাউডারের মত ছত্রাক দেখা যায়।
তীব্র আক্রমণে সম্পূর্ণ জমির ফসল পুড়ে যায়। যদি রাতে নিম্ন তাপমাত্রা ও উচ্চ জলীয় বাষ্প এবং তার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, কুয়াশা এবং পাতায় শিশির জমে থাকে তাহলে এ রোগ কয়েক দিনের মধ্যে মহামারী রূপ ধারণ করে। আক্রান্ত গাছ দ্রুত পাতা ও কা-সহ পচে যায় এবং ২-৩ দিনের মধ্যেই মাঠের সমস্ত গাছই মরে যেতে পারে।
আক্রান্ত আলুর গায়ে ও ভিতরের অংশে গাঢ় বাদামী থেকে কালচে বর্ণের দাগ পড়ে।
বাতাস, বৃষ্টিপাত, সেচের পানি ইত্যাদির সাহায্যে এ রোগের জীবাণু আক্রান্ত গাছ থেকে সুস্থ গাছে বিস্তার লাভ করে। বিকল্প পোষক যেমন টমেটো গাছ থেকেও এ রোগ বিস্তার লাভ করতে পারে।
রোগ প্রতিরোধী বা সহনশীল জাত যেমন-বারি আলু-৪৬, বারি আলু-৫৩, বারি আলু-৭৭ চাষ করা।
রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা।
আক্রান্ত জমিতে সেচ বন্ধ করে দেওয়া।
সারিতে ভালভাবে মাটি উঁচু করে দেওয়া।
আগাম জাতের আলু চাষ করা এবং আগাম সংগ্রহ করা।
নিম্ন তাপমাত্রা, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া ও বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের জন্য ৭-১০ দিন অন্তর অন্তর ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন- ডাইথেন এম-৪৫/ ইন্ডোফিল/ হেম্যানকোজেব/ ফরমোকোজেব ৮০ ডব্লিওপি/মাইকোজেব ৮০ ডব্লিওপি ইত্যাদি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করা।
জমিতে রোগ দেখা দেওয়া মাত্রই সিকিউর (২ গ্রাম/লিটার) অথবা এক্রোভেট এম জেড (২ গ্রাম/লিটার) অথবা মনা ২৮ এসসি (১ গ্রাম/লিটার) অথবা মেলোডি ডিও ৪ গ্রাম + সিকিউর ২ গ্রাম (প্রতি লিটার পানিতে) অথবা এক্রোভেট এম জেড ২ গ্রাম + সিকিউর ১ গ্রাম (প্রতি লিটার পানিতে) অথবা মেলোডিডিও ১ গ্রাম + এক্রোভেট এম জেড ২ গ্রাম (প্রতি লিটার পানিতে), ৭ দিন অন্তর উপরোক্ত যে কোন একটি ছত্রাকনাশক বা ছত্রাকনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করা।
এখানে উল্লেখ্য যে রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী হলে আরো ঘন ঘন ঔষধ ছিটানোর প্রয়োজন পড়তে পারে। ভেজা অবস্থায় জমিতে ছত্রাকনাশক না দেয়াই ভাল। আর যদি দিতেই হয় তাহরে প্রতি লিটার পানিতে ২-৩ গ্রাম সাবানের গুঁড়া পাউডার যোগ করে নিতে হবে। ছত্রাকনাশক ভালভাবে ছিটাতে হবে যাতে পাতার নীচে ও উপরে ভালভাবে ভিজে যায়। এ ক্ষেত্রে সাধারন স্প্রেয়ারের পরিবর্তে পাওয়ার স্প্রেয়ার ভাল ফল দেয়।
মাটি ভেজা অবস্থায় কিংবা বৃষ্টির পর পর আলু না তুলে শুকনা অবস্থায় মাটিতে ‘জো’ এলে আলু তোলা।
হিমাগারে আলু রাখার আগে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বীজ বাছাই করতে হবে, যাতে কোনভাবে রোগাক্রান্ত আলু সুস্থ্য বীজের সাথে না থাকে।
রোগাক্রান্ত গাছ দিয়ে আলুর স্তুপ বা সংগৃহীত আলু ঢেকে রাখা যাবে না।
আলুর মৌসুমে নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করা।
মেটালেক্সিল গ্রুপের ছত্রাকনাশকের বিরুদ্ধে ফাইটোপথোরা ইনফেসট্যান্স এর নতুন রেস তৈরি হওয়ায় এখন থেকে ঐ গোত্রের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
আক্রান্ত জমি হতে বীজ আলু সংগ্রহ করা যাবে না।
(তথ্যসূত্রে- plant disease clinic BAU)