মরিচের পরিচিতি ও জাত সমূহ


Aug 26, 2023
চাষাবাদ
মরিচের পরিচিতি ও জাত সমূহ

মরিচের পরিচিতি জাত সমূহ

 

মরিচ বাংলাদেশের একটি অর্থকরী ফসল। এটি বাংলাদেশের নিত্য ব্যবহৃত মশলা। মরিচ কাঁচা পাকা দুই অবস্থায় খাওয়া হয়। বাংলাদেশের সব জায়গায়ই এর চাষ হয়। মরিচ শুধু মশলা বা রসনাতৃপ্তিতে ব্যবহার হয় না। পরিমিত এবং নিয়মিত খেলে এটি ভিটামিন , বি, সি-এর যোগান দেয়।

 

ব্যবহারঃ 

রান্না-বান্না মুখরোচক খাবার তৈরি ছাড়াও মরিচ বিভিন্ন ধরনের আচার তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়। অনেকে মরিচের আচারও করে থাকেন।

 

জাত:

মরিচকে দুভাগে ভাগ করা যায়। ঝাল মিষ্টি। বাংলাদেশে ঝাল মরিচের মধ্যে বগুড়া, চাঁদপুরী, ফরিদপুরী ইত্যাদি আঞ্চলিক মৌসুমী জাত আছে। এছাড়া আকালী, কামরাংগা, কালো ইত্যাদি মরিচও খুব ঝাল। আঞ্চলিকভাবে আরো বিভিন্ন নামের যেমন- ছোট মরিচ, বড় মরিচ, ধানী মরিচ, সাহেব মরিচ, বোম্বাই মরিচ, গোল মরিচ, মেজর মরিচ, সনিক মরিচ, যমুনা মরিচ, বালিঝুরা মরিচ, পাটনাই মরিচ, রাঁচি মরিচ, সূর্যমুখী বারি মরিচ চাষ হয়ে থাকে।

 

বারি মরিচের বৈশিষ্ট্য নিচে দেয়া হলঃ

 

বারি মরিচ-

 

বৈশিষ্ট্য : গাছ খাটো বিস্তৃত, উচ্চতা ৩০-৩৫ সেন্টিমিটার পার্শ্ব বিস্তৃতিতে ৫৫-৬০ সেন্টিমিটার এবং গাঢ় ঘন সবুজ পাতায় পরিবেষ্টিত। গাছ ঝোপালো হওয়ায় বাহির থেকে কাঁচা মরিচ দেখা যায় না। তাই অনিষ্টকারি পাখির উপদ্রব কম হয়। প্রতি গাছে ৪০০-৫০০ টি মরিচ ধরে। গাছ প্রতি ৭০০-৭৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ পাওয়া যায়। প্রতিটি মরিচের দৈর্ঘ্য গড়ে .-. সেন্টিমিটার ব্যাস .-. সেন্টিমিটার মরিচের ত্বক পুরু। মরিচ কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকা অবস্থায় চকচকে লাল। কাঁচা এবং পাকা মরিচের ঝাল সহনীয়।

উপযোগী এলাকা  : সারাদেশ ব্যাপী

বপনের সময়  : রবি মৌসুম (সেপ্টেম্বর) খরিপ মৌসুম (মধ্য ফেব্রুয়ারী- মধ্য মার্চ)

মাড়াইয়ের সময়:  ডিসেম্বরজানুয়ারী (রবি), জুন (খরিপ)

বীজ/চারার হার

বীজের হার .-. কেজি/হেক্টর।

চারার হার ৪০০০০/হেক্টর।

বপন/ রোপনের দূরত্ব: ৫০ সেন্টিমিটার x ৫০ সেন্টিমিটার

ফলন: ১০-১২ টন/হেক্টর (কাঁচা)

 

বারি মরিচ-

 

বৈশিষ্ট্য : গাছের উচ্চতা ৮০-১১০ সেন্টিমিটার, পার্শ্ব বিস্তৃতিতে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার এবং হালকা সবুজ রং এর পাতায় পরিবেষ্টিত। প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ৭টি। প্রতিটি গাছে ৪৫০-৫০০টি মরিচ ধরে। গাছ প্রতি গড়ে ১১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচ পাওয়া যায়। প্রতিটি মরিচের দৈর্ঘ্য গড়ে সেন্টিমিটার ওজন গড়ে . গ্রাম। ১০০০ বীজের ওজন . গ্রাম।

উপযোগী এলাকা  : বাংলাদেশের সর্বত্র

বপনের সময়  : মার্চ

মাড়াইয়ের সময়:  মধ্য জুন - মধ্য জুলাই

বীজ/চারার হার

বীজ হার : .-. কেজি/হেক্টর।

চারার হার :৩৩৩৩৩ চারা /হেক্টর।

বপন/ রোপনের দূরত্ব: ৬০ সেন্টিমিটার X ৫০ সেন্টিমিটার

ফলন: ২০-২২ টন/ হেক্টর (কাঁচা)

 

বারি মরিচ-

 

বৈশিষ্ট্য : গাছের উচ্চতা প্রায় ৭৫-৮০ সেন্টিমিটার। প্রতিটি গাছে গড়ে ৬০-৭০টি পাকা মরিচ ধরে। গাছ প্রতি পাকা মরিচের গড় ফলন ১৮০-২০০ গ্রাম। মরিচের ফল (পড) লম্বা আকৃতির, দৈর্ঘ্য গড়ে ১০ সেন্টিমিটার এবং ওজন গড়ে . গ্রাম। রোগের আক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম। অপরিপক্ক অবস্থায় হালকা সবুজ এবং পরিপক্ক অবস্থায় উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয়ে থাকে। পরিপক্ক লাল শুকনা মরিচের অনুপাত :১।

উপযোগী এলাকা  : বাংলাদেশের সর্বত্র

বপনের সময়  : সেপ্টেম্বর (রবি মৌসুম)

মাড়াইয়ের সময়:  জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি

বীজ/চারার হার

বীজ হার : -. কেজি/হেক্টর (সারিতে বপন), .-. কেজি/হেক্টর (ছিটিয়ে বপন)

চারার হার :৪০০০০ চারা/হেক্টর।

বপন/ রোপনের দূরত্ব: ৫০ সেন্টিমিটার X ৫০সেন্টিমিটার (সারিতে বপন/রোপন) ১২-১৫ চারা/মিটার2 (ছিটিয়ে বপন)

ফলন: .-১০ টন/হেক্টর (পাকা মরিচ)

 

বারি মরিচ-

 

বৈশিষ্ট্য :এটি শীতকালে চাষ উপযোগী জাত।

জাতটি চরাঞ্চলসহ কমবেশি সারাদেশে চাষ করা সম্ভব।

গাছলম্বা, ঝোপালো প্রচুরশাখা- প্রশাখাবিশিষ্ঠ।

শুকনা মরিচের জন্য ইহা একটি উপযোগী জাত।

গাছলম্বায় ৮০-১০০ সেমি এবং পাতার রংসবুজ।

প্রতি মরিচের ফলনের দৈর্ঘ্য ১০-১২ সেমি, ওজন গড়ে .-. গ্রাম।

১০০০ বীজের ওজন .-. গ্রাম

প্রতি গাছে মরিচের সংখ্যা ৪৮০-৫২০ টি এবংওজন ১২০০-১৪০০ গ্রাম।

এই জাতের গাছের মরিচের ত্বক পাতলা।

এই জাতটি মাঠে ১৪০-১৫০ দিন পযন্ত (নভেম্বর- মার্চ) থাকে।

তুলনামুলকভাবে রোগ পোকার আক্রমণ কম হয়।

কচি অবস্থায় ফল সবুজ রঙের এবং পাকা অবস্থায় চকচকে লাল রঙের হয়।

হেক্টর প্রতিটোপা মরিচের (Red Ripe Chilli) ফলন ১৪-১৬ টন শুকনা মরিচ .-. টন।

উপযোগী এলাকা  : চরাঞ্চল সহ বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, নড়াইল, মাগুরা ঝিনাইদা ইত্যাদি এলাকাতে চাষ করা সম্ভব।

বপনের সময়  : অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস

মাড়াইয়ের সময়:  ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ

বীজ/চারার হার: বীজ তলায় চারা তৈরী করলে -. কেজি / হেঃ (২৪৭ শতক) বীজের প্রয়োজন হয়।আবার সরাসরি ছিটিয়ে মরিচ চাষাবাদ করলে হেক্টর প্রতি (২৪৭ শতক) - কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।

বপন/ রোপনের দূরত্ব: সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০-৬০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৫০-৬০ সেমি

ফলন: হেক্টর প্রতি টোপা মরিচের(Red Ripe Chilli)ফলন ১৪-১৬ টন , শুকনা মরিচ .- . টন। 

 

                                                                   (তথ্যসূত্রে-কৃষি প্রযুক্তি)

 

Recent Posts

ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট(BLB)

Apr 17, 2024
ফসলের রোগ-বালাই