আমন ধানের লক্ষীর গু/ভূয়াঝুল(False Smut) রোগ দমনে কৃষক ভাইদের আগাম ও পরবর্তী করণীয়

আখিরুজ্জামান সৌরভ

কৃষি অনুষদ(২০ ব্যাচ),হাবিপ্রবি ,দিনাজপুর

Nov 06, 2023
ফসলের রোগ-বালাই
আমন ধানের লক্ষীর গু/ভূয়াঝুল(False Smut) রোগ দমনে কৃষক ভাইদের আগাম ও পরবর্তী করণীয়


 কারণ

এটি উস্টিলাজিনোইডিয়া ভাইরেন্স(Ustilaginoidea virens) নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।

 

এই রোগের লক্ষন যে সময় প্রকাশ পায়ঃ

সাধারণত শীষ বের হওয়ার পরে নরম দানা/দুধ অবস্থায় এই রোগের আক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পায়। রোগ আক্রমণের পরে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে তেমন ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না।

 

রোগের অনুকূল পরিবেশ:

 ১।ধানের ফুল ফুটা অবস্থায় মেঘাচ্ছন্ন আকাশ,

 ২।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, উচ্চ তাপমাত্রা,

 ৩।দিনে গরম (২৫°-৩৫°) রাতে ঠান্ডা এই রোগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।

 ৪।অতিরিক্ত ইউরিয়া সার প্রয়োগ

 ৫।ঘন ঘন বৃষ্টিপাত।

 

রোগের লক্ষণ:

১।রোগটি ধানের শীষে নরম দানা/দুধ অবস্থায় প্রকাশ পায়।

২।ধানের ছড়ার কিছু ধানে বড় গুটিকা দেখা যায়।

৩।গুটিকার ভেতরের অংশে হলদে-কমলা রঙ বহিরাবরণ সবুজ রঙের হয়।

৪।বহিরাবরণ পরবর্তীতে আস্তে আস্তে কালো হয়ে যায়।

৫।কচি গুটিকা গুলো সেমি. এবং পরিপক্ব অবস্থায় আর বড় আকারের  হতে পারে।

৬।এক রকমের আঠা জাতীয় পদার্থ থাকার জন্য গুটিকা থেকে ক্ল্যামাইডোস্পোর জাতীয় অনুজীব সহজে বের হয় না।  

  ৭।সাধারণত কোনো শীষে কয়েকটা ধানের বেশি আক্রমণ হতে দেখা যায় না।

৮।চিকন সরু জাতীয় আমন ধানে রোগ বেশী হয়।

 

আগাম করণীয়/প্রতিকার:

১।এটি বীজ বাহিত রোগ। বিধায় ধানের বীজ বপনের আগে বীজ শোধন করে নিতে হবে।

২।সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা

৩।অতিরিক্ত ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ না করা।

৪।রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন জাত ব্যবহার করা।

৫।ব্রি ধান-৪৯, বিনা-, স্বর্না হাইব্রিড জাতে রোগ হয়ে থাকে/ওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই যারা উক্ত জাত সমূহ আবাদ করেছেন তারা অবশ্যই নিচের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক সমূহ আগাম স্প্রে করতে পারেন-

o   (প্রপিকোনাজল + ট্রাইসাইকোনাজল) গ্রুপের ছত্রাকনাশক  অথবা

o   প্রপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশ অথবা

o   স্ট্রবিন জাতীয় ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করলে ভালো সুফল পাওয়া যায়।

বি.দ্রঃঅব্যশই প্রতি শতকে দুই লিটার করে পানি বিকাল বেলা স্প্রে করতে হবে

প্রয়োজনে সাত দিন পরপর দুই বার স্প্রে করতে পারে

 

পরবর্তী করণীয়:

১।আক্রান্ত গাছ/শীষ তুলে ফেলা রোগ দমনের সবচেয়ে ভালো উপায়।

২।আক্রান্ত জমি থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

৩।ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।

৪।সুস্থ ক্ষেত থেকে বিজাত/রোগিং করে বীজ সংগ্রহ করে পরবর্তী মৌসুমের জন্য বীজ সংরক্ষণ করতে হবে।

৫।আক্রান্ত ক্ষেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না।

 

Recent Posts

ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট(BLB)

Apr 17, 2024
ফসলের রোগ-বালাই