মাল্টা গাছের রোগ ও তার প্রতিকার
ব্যবস্থাপনাঃ
বেগুনের মড়ক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি
বেগুনের গুণ অনেক। বেগুন বাজারে দু’রকম রঙের পাওয়া যায়। সাদা ও বেগুনি। বেগুনি বা কালো বেগুনের গুণ তুলনামূলকভাবে বেশি। বেগুন যত কচি হবে সেই বেগুন তত গুণসম্পন্ন। কচি বেগুন নিয়মিত খেলে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে। বেগুনের উপকারিতা বহু। চিকিৎসকদের মতে, বসন্তকালে বেগুন খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট জরুরি। বেগুনে কফ নাশ হয়। হিং ফোড়ন দিয়ে বেগুনের তরকারি তেল দিয়ে রান্না করে খেলে গ্যাসের রোগীরা উপকার পাবেন। এছাড়া, বেগুন মূত্রবর্ধক। বেগুন মধুর, তীক্ষ্ম ও উষ্ণ। পিত্তনাশক, জ্বর কমায়। খিদে বাড়ায়। পরিপাক করা সহজ এবং পুরুষত্ব বৃদ্ধি করে। সুকোমল বেগুন সম্পূর্ণ নির্দোষ। শরীরে মেদ বৃদ্ধি রোধ করে। যাঁরা মোটা হতে চান না, তাঁদের পক্ষে বেগুন অত্যন্ত কার্যকরী সবজি। তবে এই ফসলটি চাষ করতে গিয়ে বেগুনে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এর মধ্যে বেগুনের একটি মারাত্মক ছত্রাক জনিত রোগ হল ‘মড়ক’। এ রোগের আক্রমণে ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি বড় ধরণের ক্ষতিও হয়ে থাকে।আজকের লেখায় জানবো বেগুনের মড়ক রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সমন্ধে।
Phomophsis blight/Fruit Rot: বাংলায় বলা হয় মড়ক রোগ। বেগুন গাছে হয়ে থাকে এই রোগ। Causal Organism : Phomopsis vexans নামের ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগ হয়।
লক্ষণ: চারা গাছ মাটিতে নেতিয়ে পড়ে(damping off) এবং বড় গাছে ক্যাঙ্কার /ক্ষত সৃষ্টি করে।আক্রান্ত গাছ মরে যায় এবং ফল এ পচন দেখা যায়।
পাতা যে কোন সময় আক্রান্ত হতে পারে।সাধারণত নিচের পাতায় প্রথম দাগ দেখা যায়,দাগ গুলো স্পষ্ট গোলাকার ও ধূসর বাদামি রঙ ধারণ করে।দাগের কেন্দ্রস্থল কিছুটা হাল্কা রঙের হয়।অনেক সময় কালোকালো পিকনিডিয়া দেখা যায়।আক্রান্ত পাতা ধীরে ধীরে মরে যায়।
কান্ডের গোড়ায় ক্যাংক্যার সৃষ্টি হয়।মাঝে মাঝে বাকল খসে পড়ে এবং কান্ডের টিস্যু অনাবৃত অবস্থায় থাকে। আক্রান্ত ফলের গায়ে হাল্কা দাগ দেখা যায় এবং পিকনিডিয়া দেখা যায়, রোগের কারণে ফল সম্পূর্ণ শুকিয়ে মামী(Mummy) তে পরিণত হয়।
phomopsis ছত্রাক বীজ ও আক্রান্ত গাছে বছরের পর বছর বেঁচে থেকে। ছত্রাক ২১-৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ও স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় খুব দ্রুত বাড়ে।
রোগ নিয়ন্ত্রণের উপায়: ১. রোগ মুক্ত বীজ সংগ্রহ, ২.সুস্থ ও নীরোগ বেগুনের এর ক্যালিক্স মারকিউরিক ক্লোরাইড সলিউশনে (২৯ গ্রাম ৩৭ লিটার পানিতে নিয়ে) ২০ মিনিট ডুবিয়ে বীজ সংগ্রহ করা যায়। ৩.Ziram / Captan চারা গজানোর পর বীজতলায় ছিটালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে উৎপাদিত ফলসমুহের মধ্যে আম অন্যতম। স্বাদে, গন্ধে ও তৃপ্তি প্রদানে আম অতুলনীয় তাই আমকে ‘ফলের রাজা’ বলা হয়। আম পছন্দ করে না এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশের সব এলাকাতে আম গাছ দেখা গেলেও চাপাই নবাবগঞ্জ, রাজশাহী, দিনাজপুর, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় বাণিজ্যিকভিত্তিতে আম চাষ হয়ে থাকে। আমাদের দেশে আমের ফলন বেশ কম, হেক্টর প্রতি মাত্র ৪ টন। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রায় ১০ টন। আমের ফলন কম হওয়ার যে সকল কারণ দায়ী, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ তাদের মধ্যে অন্যতম। পোকা-মাকড়ের আক্রমণে শুধু মাত্র ফলন কমে যায় তাই নয়, অনেক সময় আমের ফলন শূন্যের কোঠায়ও পৌঁছতে পারে। সুতরাং আমের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সঠিক সময়ে পোকা দমন অপরিহার্য।তাইতো আজকের লেখায় আপনাদের জানাবো আমের মাছি পোকা সমন প্রক্রিয়া।
আসুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক আমের মাছি পোকা দমন প্রক্রিয়া ঃ
রোগের নামঃ
আমের মাছি পোকা
লক্ষণঃ
১। এ পোকা ফল পরিপক্ক হওয়ার সময় অভিপজিটর ঢুকিয়ে তাতে ডিম পারে । ২। ডিম ফুটে কীড়া বের হয়ে ফলের মাংসল অংশ খেতে থাকে এবং ফলের ভেতরে অংশ পঁচে যায় ।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। ফল ব্যাগিং করা বা পলিথিন দিয়ে প্যাচানো ২। নষ্ট ফল বাগান থেকে অপসারণ করা। ৩। বিষটোপ ব্যবহার করা । ১০০ গ্রাম পাকা আমের রস + ৫ গ্রাম ভিটাব্রিল + ১০০ মিলি পানি মিশিয়ে বিষটোপ তৈরি করতে হবে। ৪। বেইট ট্র্যাপ স্থাপন করা ও ফেরোমন ফাদ (যেমন: ব্যাকট্রো-ডি ৮০ টি লিউর/ হেক্টর হারে) ব্যবহার করা। ৫। ফেনিট্রথিয়ন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সুমিথিয়ন ২.৪ মি.লি. / লি. হারে বা টাফগার ২ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করা।
সাবধানতাঃ
১। বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না ।
করনীয়ঃ
১। ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন । ২। পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাকনাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন । ৩। নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।