জিনিয়া মূলত এর বাহারি রঙের ফুলের জন্য সুপরিচিত। মৌসুমী ফুলের মধ্যে এটি বেশ সুন্দর ও আকর্ষণীয় একটি ফুল। তবে এর কোন গন্ধ নেই। এর আদি নিবাস মেক্সিকো। জিনিয়া ফুল সাদা, হলুদ, লাল, বাদামি, বেগুণি, কমলা, সবুজসহ বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। মূলত মেক্সিকোর এই ফুল এখন সারা পৃথিবীতে চাষ করা হয়। অন্তত ২০ প্রজাতির জিনিয়া এ পর্যন্ত চিহ্নিত হয়েছে। সবচেয়ে বহুল প্রাপ্ত জিনিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম Zinnia elegans। জিনিয়া শীতকালীন ফুল হলেও সারাবছর চাষ করা যায়। বীজের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা যায়। জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসে এ ফুলের বীজ বপন এবং চারা উত্পাদনের উপযুক্ত সময়।
জিনিয়ার জাত
জিনিয়ার সবচাইতে জনপ্রিয় জাত হচ্ছে ডাবল ফুল । এটি পুরোপুরি চন্দ্রমল্লিকার মতই দেখতে। বাণিজ্যিকভাবে এই জাতের ফুলটির চাহিদা বেশি থাকায় এর বীজ সব জায়গায় অ্যাভেলেবল পাওয়া যায় ।
জিনিয়া ফুল চাষের জন্য জমি তৈরি ও টবের মাটি তৈরি
জমিতে চাষ করলে লাঙ্গল দিয়ে খুব ভালো ভাবে চাষ দিয়ে নিতে হবে এবং মাটিতে উপস্থিত জৈব উপাদানের পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রয়োজন মতো পচা গোবর ও পাতা পচা সার প্রয়োগ করতে হবে। জিনিয়ার জমিতে হাড়ের গুড়া বা সুপার ফসফেট এর প্রয়োজন হয়। জমিতে চাষ করলে প্রয়োজনমতো হাড়ের গুরো বা সুপার ফসফেট যথেষ্ট পরিমাণে মিশিয়ে দিতে হবে। টবে জিনিয়া ফুল চাষ করলে মাটি তৈরির সময় 40% পরিমাণ জৈব সার 60 পার্সেন্ট দোআঁশ মাটি দিয়ে টপ বোঝাই করতে হবে । এরপর টবের প্রতি ফুট মাটির সাথে (মানে 20 কেজি মাটির ) সাথে ৭ চা চামচ পরিমান হাড়ের গুড়া বা সুপার ফসফেট সার প্রয়োগ করে নিতে হবে। এছাড়াও টপ ভরাট করার সময় মাটিতে দুই থেকে তিন চামচ কলিচুন এবং একমুঠো রেড়ির খৈল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এই টপ টি কে অন্তত এক মাস ঐ অবস্থায় মাটিসহ রেখে দিতে হবে।
চারা রোপন:
চারা রোপনঃ বীজতলার চারাগুলি ২/৩ ইঞ্চি বা ৫-৮ সেমি. এর মত লম্বা হলেই বাগানে বা টবে রোপন করতে হবে। বাগানে রোপন করলে ১.৫ফুট বা ৪৫ সেমি. দূরে দূরে রোপন করতে হবে। রোপনের কিছু দিনের মধ্যে গাছে ও নিকৃষ্ট ধরনের ফুল ফুটতে আরম্ভ করে। কিন্তু বর্ষাকালের মাঝামাঝি ও শেষের দিকে গাছ যখন ৩ ফুট বা ৯০ সেমি. এর মত লম্বা হয় তখন গাছে বড় বড় ফুল হয়।
সার ও অন্যান্য পরিচর্যা:
সার প্রয়োগঃ
চারা রোপনের প্রায় ১৫-২০ দিন পর থেকে গাছের গোড়ায় ৭ দিন পর পর তরল সার (খৈল ও কাচা গোবর ১০ দিন মাটির পাত্রে ভিজিয়ে রেখে তার পানি), পাতাপচা সার বা আবর্জনা সার, হাড়গুড়া দিতে হবে। ফুল আসার সময় এ তরল সারে প্রতি লিটারে ১০০ গ্রাম সুপার ফসফেট মিশিয়ে দিলে ফুলের রং ও গড়ন ভালো হবে।
পানি সেচঃ
গাছের গোড়া শুকিয়ে এলে হালকা সেচ দিতে হবে। টবে গাছ রোপন করলে পরিমিত সেচ দিতে হয়।
আগাছা পরিস্কারঃ
বাগানের এবং টবের দোপাটি গাছের গোড়ার মাটি নিয়মিত খুড়ে আলগা করতে হবে এবং ঘাস আগাছা ইত্যাদি তুলে ফেলতে হবে।
পোকা দমনঃ
থ্রিপস, লাল মাকড়সা, জাবপোকা ও শোষক পোকা আক্রমণ করতে পারে। উপযুক্ত কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়ে নানা প্রকার রোগ দমন করা যায়।
অনলাইনে বীজ কোথায় পাওয়া যায়ঃ
দোকানের পাশাপাশি এখন অনলাইনে বীজ কিনতে পারবেন। কিনতে নিচে বীজ লেখা লিঙ্কের উপর ক্লিক করুনঃ