বায়োফ্লক
বায়োফ্লক প্রযুক্তি হচ্ছে মাছ চাষ করার লাভজনক একটি কৃত্রিম পদ্ধতিবায়োফ্লক হল উপকারি ব্যাকটেরিয়া, অণুজীব ও শৈবালের সমম্বয়ে তৈরি হওয়া পাতলা আস্তরণ। যা জলকে ফিল্টার করে। জল থেকে নাইট্রোজেন জাতীয় ক্ষতিকর উপাদানগুলি শোষণ করে নেয় এবং এর প্রোটিন সমৃদ্ধ উপাদান খাবার হিসেবে মাছ গ্রহণ করতে পারে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে পানি ব্যবস্থাপনা ও ফ্লক তৈরী করার কলাকৌশল…
বায়োফ্লকে মাছ চাষের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা ও ফ্লক একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। যেকোন মাছ বা চিংড়ি চাষ বা বায়োফ্লক প্রজেক্ট করার আগে পানির উৎস কি হবে এবং তার গুণাগুণ বা ব্যবহারের উপযোগীতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা জরুরী।
পানির উৎসঃ
গভীর নলকূপ, সমূদ্র, নদী, বড় জলাশয়,লেক,বৃষ্টি ইত্যাদির উৎসের পানি গুণ মান ভাল থাকলে ব্যবহার করা যায়।
বায়োফ্লকের জন্য উপযোগী পানি তৈরীঃ
প্রথমে ট্যাংক ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এর পর নির্বাচিত পানির গুণাগুণ পরীক্ষা করে পানি প্রবেশ করাতে হবে।
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানির গুণাবলীঃ
১. তাপমাত্রা – ২৫ – ৩০ ° C
২. পানির রং – সবুজ, হালকা সবুজ, বাদামী।
৩. দ্রবীভূত অক্সিজেন – ৭- ৮ mg/L
৪. পিএইচ – ৭.৫ – ৮.৫
৫. ক্ষারত্ব – ৫০ – ১২০ mg/L
৬. খরতা – ৬০ – ১৫০ mg/ L
৭. ক্যালসিয়াম – ৪ – ১৬০ mg/L
৮. অ্যামোনিয়া – ০.০১ mg/L
৯. নাইট্রাইট – ০.১ – ০.২ mg/L
১০. নাইট্রেট – ০ – ৩ mg/L
১১. ফসফরাস – ০.১ – ৩ mg/L
১২. H2S – ০.০১ mg/ L
১৩. আয়রন – ০.১ – ০.২ mg/L
১৪. পানির স্বচ্ছতা – ২৫ – ৩৫ সে.মি.
১৫. পানির গভীরতা – ৩ – ৪ ফুট
১৬. ফলকের ঘনত্ব – ৩০০ গ্রাম / টন
১৭.TDS – ১৪০০০ – ১৮০০০ mg/L
১৮. লবণাক্ততা – ৩ – ৫ ppt
পানিতে ফ্লক তৈরিঃ–
প্রথম ডোজে ৫ ppm প্রেবায়োটিক, ৫০ ppm চিটাগুড়, ৫ ppm ইস্ট, পানি প্রতি টনের জন্য ১ লিটার, একটি প্লাস্টিকের বালতিতে অক্সিজেন সরবরাহ করে ৮- ১০ ঘন্টা কালচার করে প্রয়োগ করতে হবে। ২য় দিন থেকে ১ppm প্রোবায়োটিক, ৫ ppm চিটাগুড়, ১ ppm ইস্ট, প্রতি টনের জন্য ১ লিটার পানি দিয়ে উপরের সময় ও নিয়মে কালচার করে প্রতি দিন প্রয়োগ করতে হবে।
বায়োফ্লকের এক্টিভিটি পর্যবেক্ষণঃ
পানিতে যথাযথ পরিমাণ ফ্লক তৈরি হলে-
১. পানির রং সবুজ বা বাদামী দেখায়।
২. পানিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ কণা দেখা যায়।
৩. পানির অ্যামোনিয়া পরীক্ষা করলে পানি অ্যামোনিয়া মুক্ত দেখায়।
৪. প্রতি লিটার পানিতে ০.৩ গ্রাম ফ্লকের ঘনত্ব পাওয়া যাবে।
৫. ক্ষুদিপানা দেওয়ার পর তাদের বংশ বিস্তার পরিলক্ষিত হয়।
ট্যাংক নির্মাণ:
প্রথমে গ্রেড রড দিয়ে ট্যাংকের বৃত্তাকার খাঁচাটি তৈরি করতে হবে। যেই স্থানে ট্যাংকটি স্থাপন করা হবে সেই জায়গাতে খাঁচার পরিধির সমান করে সিসি ঢালাই দিতে হবে। বৃত্তের ঠিক কেন্দ্রে পানির একটি আউটলেট পাইপ স্থাপন করতে হবে। এরপর খাঁচাটিকে ঢালাই মেঝের উপর স্থাপন করে মাটিতে গেঁথে দিতে হবে। মেঝের মাটি শক্ত ও সমান হলে ঢালাইয়ের পরিবর্তে পরিধির সমান করে পুরু পলিথিন বিছিয়েও মেঝে প্রস্তুত করা যায়। এরপর উন্নতমানের তারপুলিন দিয়ে সম্পূর্ণ খাঁচাটি ঢেকে দিতে হবে। তার উপর পুরু পলিথিন দিয়ে আচ্ছাদিত করে তাতে পানি মজুদ করতে হবে।
এরেটর পাম্পঃ
বায়োফ্লক ট্যাংকে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়ার জন্য একটি এরেটর পাম্প স্থাপন করতে হবে। ছয় ফুট ব্যাসার্ধের এবং চার ফুট উচ্চতার একটি ট্যাংকে প্রায় ত্রিশ হাজার শিং মাছ চাষ করা যাবে।
বায়োফ্লক সরঞ্জাম
অফলাইনের পাশাপাশি এখন অনলাইনেও অর্ডার করে কিনতে পারবেন যে কোন বায়োফ্লকের সরঞ্জাম। বায়োফ্লকের সরঞ্জাম কিনতে নিচে দেয়া বায়োফ্লক সরঞ্জাম লেখায় ক্লিক করুন: